চাষাঢ়ায় ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগ, আহত ৪

শহর প্রতিনিধিনারায়ণগঞ্জ শহরে মহানগর ছাত্রদলের ৪ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে জখম করেছে সাবেক মহানগর ও তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দরা। শুক্রবার রাতে শহরের কলেজ রোড এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

এসময় আহত ছাত্রদল নেতাদের ছিনতাইকারী আখ্যা দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনার চিত্র ধারন করতে গেলে লাঞ্ছিত করা হয় গণমাধ্যমকর্মীদের।

আহতরা হলেন, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল ইসলাম রাজীব, তার আত্মীয় ও ছাত্রদল কর্মী কাজল, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি অনিক এবং তার বন্ধু সোহাগ। আহতদের মধ্যে আজিজুল ইসলাম রাজীবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাত ৮টার দিকে কলেজ রোডে দুজন ছেলেকে মারধর করতে থাকে প্রায় ৩০/৪০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলো মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ। পরবর্তীতে দুজনের একজন দৌড়ে প্রাণ বাঁচায়। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই হাজির হয় রাজীব ও কাজল। এসময় তাদেরও বেধরক মারধর করতে থাকে। লাঠি সোঁটা, বাশ, ইট দিয়ে থেঁতলে দেয়া হয় রাজীবের মুখ। ঘটনার পরপরেই গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে চিত্র ধারন করতে গেলে তাদের উপরেও চড়াও হয় মহানগর ও কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় জাগো নিউজের প্রতিনিধি মোবাশ্বির শ্রাবণকে মারধর ও আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি সাবিত আল হাসানের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। বিএনপির নেতারা ইজিবাইকে তুলে আহত ছাত্রদল নেতাকে হাসপাতালে নিতে চাইলে পুনরায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের সামনেই তাদের মারধর করে।

হাসপাতালে যাবার পথে আহত ছাত্রদল নেতা রাজীব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলাম। হটাৎ অনিক এসে বলে তাকে ও তার বন্ধুকে রিয়াদের লোকজন মেরেছে। আমি শুধু কথা বলতে গিয়েছিলাম যেন সোহাগকে ছেড়ে দেয়। এই কথা বলতে যেতেই আমাকে ঘিরে ধরে মারধর করতে থাকে।

‘মারধরের শিকার জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি মোবাশ্বির শ্রাবণ বলেন, ‘মারামারির খবর পেয়ে ডাক বাংলোর সামনে ঘটনার ভিডিও ধারন করতেই আমার ও আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি সাবিতের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এর কিছুক্ষন পরেই আমার জামার কলার ধরে টেনে নিয়ে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়।

‘মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ বলেন, ‘তারা এখানে ছিনতাই করে প্রায়ই। কলেজের ছাত্রদের ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছিলো দীর্ঘদিন। আজকে তাদের হাতেনাতে ধরে এলাকাবাসী ও কলেজের ছাত্ররা মারধর করেছে।‘

এদিকে সাংবাদিকের উপর আক্রমনের বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে হাবিবুর রহমান রিয়াদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘ভিড়ের ভেতর হয়তো না চিনে ছাত্রলীগের কোন কর্মী এই ভুল করেছে। তারপরেও সাংবাদিকের উপর হাত তোলার বিচার আমি করবো।

‘মারামারির বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘ঘটনাস্থল সদর নাকি ফতুল্লা থানায় তা দেখা হচ্ছে। তাছাড়া কে কাকে মেরেছে এবং ঘটনাটা কি তা এখনও আমাদের কাছে পরিস্কার নয়। বিষয়টি জেনে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।‘