চাষাঢ়ায় মহানগর বিএনপির কর্মসূচিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১২

নিজস্ব প্রতিনিধি :

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কালোপতাকা মৌন মিছিলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিক, পথচারী সহ বিএনপির অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ এসে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। 

আহত দুই সাংবাদিক হলেন- সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন আরিফ হোসেন ও একাত্তর টিভির ক্যামেরাপার্সন উল্লাস মিয়া। এছাড়া বাকি আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলের জন্য নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় নেতৃবৃন্দের বক্তব্য চলাকালে বিকাল ৫টার দিকে লাঠি-সোঠা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় মহানগর যুবদলে পদবঞ্চিত মাজাহারুল ইসলাম জোসেফ সমর্থকরা। এ সময় তারা নেতাকর্মীদের এলোপাথারী লাঠিপেটা করে এবং ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলে এবং মাইক ভাংচুর করে। 

এই হামলা ও মারধরের ভিডিও চিত্র ধারন করতে গেলে সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন আরিফ হোসেন ও একাত্তর টিভির ক্যামেরাপার্সন উল্লাস মিয়া কে  লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলাকারিদের প্রতিরোধ করতে মৌন মিছিলে আসা নেতাকর্মীরা লাঠি ও ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে পাল্টা হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংর্ঘষ হয়। এতে বিএনপির আরও ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে বিএনপির নেতারা দাবি করেন। পরে পুলিশ গিয়ে হামলাকারি জোসেফ গ্রুপকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশ বেশ কয়েকরাউন্ড টিয়ারসেল ছুড়ে মারে। 

তবে বিএনপির নেতারা দাবি করেন, সরকারি দলের ইন্ধনে তাদের শান্তিপুর্ণ কর্মসুচিতে হামলা চালানো হয়েছে। মূলত মঙ্গলবার যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা ও মহানগরের পৃথক চারটি কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এই চার কমিটির পদবঞ্চিত ও পদ পাওয়া নেতার সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছে বলে দাবি করেন। এর মধ্যে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম জোসেফের লোকজন বেশি হামলা চালিয়েছে।

আহত একাত্তর টিভির ক্যামেরাপার্সন উল্লাস মিয়া বলেন, আমরা বিএনপির কর্মসূচির প্রোগ্রাম কাভারেজ করতে গেলে হঠাৎ করে এক দল যুবক মুখে কালো কাপড় পরিধান করে লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা করে। ওই সময় আমরা মারধরের ভিডিও চিত্র ধারন করতে গেলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমি সহ সময় টিভির ক্যামেরা পারসন আরিফ হোসেন আহত হয়েছেন। এছাড়া আরও অনেকে আহত হয়েছেন। 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে কে বা কারা লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এতে দলের নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়েছে। যারা এই হামলা চালিয়েছে তারা সরকারী দলের দালাল। তবে দলের নেতাকর্মীদের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নই। 

বিএনপি কোন নেতার লোকজন এই হামলা করেছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লোক মুখে জানতে পেরেছি বিএনপি নেতা জোছেফের লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। তবে বিএনপির কর্মসূচিতে বিএনপির কেউ যদি হামলা চালিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সাংবাদিক সহ আরও কয়েক জন আহত হয়েছেন। এছাড়া তারা কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।