জাকির খানের মুক্তির অপেক্ষায় বিশাল কর্মী সমর্থকরা

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান দীর্ঘ ২১ বছর যাবত নারায়ণগঞ্জের রাজপথের রাজনীতির বাহিরে থাকলেও বিএনপির রাজনীতিতে তার রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। নারায়ণগঞ্জে জাকির খানের কর্মী বাহিনীর ‍উপর ভর করে শীর্ষ নেতা বনে গেছেন এমন নেতার অভাব নেই নারায়ণগঞ্জে। জাকির খান দেশের বাহিরে থাকায় তার নেতাকর্মীদের ব্যবহার করেছেন অনেকেই। জেলখানায় আছেন দুই বছরের বেশি সময় ধরে। এতোকিছুর পরেও কারাবন্দি জাকির খানের বিশাল কর্মী বাহিনী আছে তার অপেক্ষায়।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির রাজনীতির বিশাল অংশ জুড়ে আছে জাকির খানের নেতাকর্মীরা। বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলনেও তার নেতাকর্মীরা রাজপথে ভুমিকা রেখেছেন।স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগকে ঠেকাতে হলে জাকির খানের মত নেতাকে মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে প্রয়োজন। মহানগর বিএনপির কমিটিতে জাকির খানের কোনো পদ পদবী না থাকলেও তার হাজার হাজার নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে রাজপথে রাজনীত করেছেন বিগত সাড়ে ১৫টি বছর।

নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী বলয় জাকির খানের। কারাবন্দি জাকির খানও মহানগর বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতাদের চেয়ে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী।নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে বলয়ভিত্তিক রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারনে একাধিক মামলার আসামী হয়ে দেশান্তরি হয়েছিলেন জাকির খান। দেশের বাহিরে থেকেও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির একটি অংশের নেতৃত্ব দিয়েছেন জাকির খান।

দলের ভেতর ও বাহিরের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন জাকির খান। এখনো তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। জাকির খানকে জামিনে মুক্ত করতে তার অনুগামীরা যেমন অপেক্ষায় আছে, ঠিক তেমনি জাকির খান যাতে জামিনে মুক্তি না পান সেজন্য আছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নেতা জাকির খানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৩৩টি মামলার মধ্যে ৩০টি মামলায় খালাস পেয়েছেন। যার মধ্যে ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলাসহ দুটি মামলা নারায়ণগঞ্জে এবং একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে ঢাকায়। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি দুটি মামলায় জামিন পাবেন এবং হত্যা মামলাটি থেকে জাকির খান মুক্তি পেয়ে জনতার মাঝে ফিরবেন।

জাকির খান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি করে নারায়ণগঞ্জের সর্ববৃহত্তর সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। জাকির খান মুক্তি পেলে নারায়ণগঞ্জে আরেকটি ঐতিহাসিক জনসমাবেশ হয়ে যাবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যেখানে জাকির খানকে কোর্টে আনা হলেই হাজার হাজার জনতার ঢল নামে আদালত পাড়ায়।

জাকির খানের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, কারাবন্দি জাকির খানের দিন যতই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততই কর্মী ও জনসমর্থকদের পাল্লা ততটাই ভারি হতে দেখা যাচ্ছে। ষড়যন্ত্রমুলকভাবে জাকির খান হত্যা মামলার আসামি হলেও ছিটে ফোটাও জনসমর্থন কমেনি তার, বরং দিনে দিনে সেটা আরো বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কোন পদ পদবিতে তার নাম না থাকলেও, হেমিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মত হাজার হাজার নেতাকর্মীরা তার মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে রাজপথ প্রকম্পিত করে চলেছেন।

জাকির খানের বিশ্বস্ত কর্মী জেলা ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক দিদার খন্দকার বলেন, জাকির খাঁন হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক ব্রান্ড। যার পরিচিতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে আর্ন্তজাতিক পর্যায় পর্যন্ত পেরিয়ে গেছে। জাকির খান জাতীয়তাবাদী শক্তিতে এতটাই বিশ্বাসী যে, প্রয়াত মহিউদ্দিন লিটন যিনি নারায়ণগঞ্জ বন্দর ঘাট পরিচালনা করতেন, সেই সময় সাবেক এমপি সেলিম ওসমান তাকে দিয়ে কোটি টাকার প্রপোজ দিয়েছিল। পাশাপাশি সকল মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। বিনিময়ে জাকির খানকে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরতে বলেছিলেন, মানে তাকে পুণরায় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু জাকির খান সরাসরি সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন, সেই সাথে বলে দেন আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশের সৈনিক হিসেবে বিএনপির রাজনীতি করছি। বিএনপি একটি জনগণের অধিকার আদায়ের আদর্শিক দল। এই দল ছেড়ে অন্য দলে যোগদান করা মানে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীর অনেক ভালবাসা পেয়েছি, তাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারবোনা। তবে জাতীয়তাবাদীতে বিশ্বাসী হয়ে আমি গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনের পক্ষে থেকে মানুষের অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকতে চাই। এখানে যে তৃিপ্ত আছে সেটা আপনাদের কোটি টাকার মধ্যেও নেই।

দিদার খন্দকার আরো বলন, যে নেতা বহু বছর ধরে রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়ে ঘর ছাড়া নিজের সন্তানকে বুকে টেনে নিতে পারেন না। একজন বাবার জন্য এরচেয়ে বড় কষ্ট আর কি হতে পারে। অথচ তিনি চাইলে এক মুহুর্তে সকল সমস্যা সমাধান করে বাড়ি ফিরে নিজের সন্তানকে বুকে টেনে নিতে পারতেন। পাশাপাশি অর্থ ও প্রতিপত্তিও পেতেন। তা না করে জনগণের অধিকারের কথা চিন্তা করে সকল প্রস্তাবকে মুহুর্তের মধ্যে নাকচ করে দেন। অথচ অনেক নেতাই দ্বায়িত্ব পেয়ে যেভাবে লুটপাট, দখলবাজী, চাঁদাবাজী করে নিজের পকেট ভারি করছেন। তারও চান না জাকির খান মুক্তি পেয়ে রাজপথে থাকুক। জাকির খান মুক্তি পেলে তাদের অবৈধ অর্থ আয়ের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে।

দিদার খন্দকার বলেন, বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা আছেন যারা জাকির খানের মুক্তির পক্ষে নেই। অথচ দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রাণের দাবি, জাকির খানের মুক্তি। ইনশাল্লাহ সেটা অচিরেই বাস্তবায়ন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *