দুই দিন পর খুললো আওয়ামী লীগ অফিসের তালা

শীর্ষ নেতাদের অনুরোধে খুললো মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের তালা নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনুরোধে দুই দিন পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় শহরের দুই নম্বর রেল গেইট সংলগ্ন মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের গেটের তালা খুলে দেওয়া হয়।

মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম চৌধূরীর উপস্থিতিতে ১৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাব্বির আলম সাগর মহানগর আওয়ামী লীগের তালা খুলে দেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ওমর খালেদ এপন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জসিমউদ্দিন জসু, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সালাউদ্দিন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি কাজী শহীদ, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সুজু, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সিরাজুল মজিদ।

তালা খুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে ১৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাব্বির আলম সাগর বলেন, এমপি শামীম ওসমান আজকে এক মিটিংয়ে অনুরোধ করেছে তালা খুলে দেওয়ার জন্য। মেয়র আইভী তালা খুলে দেওযার জন্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের দিয়ে আমাকে জানিয়েছেন। এই অনুরোধের ফলে সন্ধ্যার দিকে আমি নিজে গিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের তালা খুলে দিয়েছি। তবে কমিটির বিষয়ে কেউ কোন আশ্বাস দেয়নি। শুধুমাত্র তাদের অনুরোধে আমি তালা খুলে দিয়েছি।

এ বিষয়ে পরে দল সিদ্ধান্ত নেবে। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নীতিনির্ধারকরা এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। এই আশ্বাসের ফলে তালা খোলা হয়েছে। তবে কমিটিতে যোগ্যরা স্থান না পেলে আমরা পাল্টা কমিটি দেবো। প্রতিবাদ করে যাবো।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, যারা তালা লাগিয়েছে তারা খুলে দিয়েছে। আমিতো আগেই বলেছি আমিতো একা আওয়ামী লীগের সব কিছু নই। দল ও দলের কার্যালয় সবার। আমরা যেই কমিটি করেছি তার কাগজ কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। কেন্দ্র এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

এর আগে, গত শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী মহানগরের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। ওই সভায় বক্তব্যের এক অংশে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র আইভী বলেন, ‘এই ওয়ার্ডে আমাদের ছোটভাই এপন আর চঞ্চলকে নেতা বানায়া দিল। ওরা যদিও নেতা হওয়ার যোগ্যতা রাখে। কিন্তু আনোয়ার কাকা (মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি) প্রতিহিংসার মনোভাব নিয়ে এই কমিটি দিয়েছেন। তিনি দেওভোগকে বুঝিয়েছেন, উনি যা চাইবেন তা হবে এখানে। যেই দেওভোগে পূর্বপুরুষেরা নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগের, তাদের অসম্মানিত করেছনে তিনি। আজকে এখানে দাঁড়িয়ে দেওভোগের মানুষ হিসেবে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম আমি।’

ওই দিন রাতে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাব্বির আহমেদ সাগরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে এবং তাকে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেয়।

জানাগেছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের ১১ থেকে ২৭ নম্বর পর্যন্ত ১৭টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা মহানগর আওয়ামী লীগের এই কমিটি ঘোষণা করেন। এরপর থেকে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ক্ষোভে ফুঁসে উঠেনে। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাইনাস করে বিতর্কিতদের কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন।