নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিক দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে শহরের প্রেস ক্লাব মিলনায়তনের পাঁচতলায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন – নারায়ণগঞ্জ মেইল অনলাইনের সম্পাদক মাসুদ রানা রনী ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সোজাসাপ্টা পত্রিকার সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ সহ ১০ জন।এই ঘটনায় মাথায় রক্তাক্ত জখম হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাঁতরাচ্ছে সাংবাদিক
মাসুদ রানা রনী। তিনি বলেন, ‘ স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের প্রেস ক্লাবে সদস্য পদ দেওয়ার দাবি নিয়ে আমরা ২০-৩০ জন সাংবাদিক প্রেসক্লাবে যাই। সেখানে যাওয়ার আগে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন ভাইকে ফোন করে সেখানে গিয়েছি। তবুও তারা আমাদের দাবিগুলো না শুনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপরে হামলা করে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। সেখানে এনটিভির জেলা প্রতিনিধি ও মানবজমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন রবিন এক ধরনের লেজার লাইট দিয়ে ইলেকট্রিক শক দিয়েছে। তারা আমাদের কোন কথা বলার সুযোগ দেয়নি। আবু সাঈদ মাসুদ, রফিকুল ইসলাম জীবন, জুয়েল, মাহফুজ সহ উপস্থিত আরও অনেকে আমাদের ওপরে হামলা চালায়। গডফাদার শামীম ওসমানের প্রশ্রয়ে তারা এতোদিন প্রেস ক্লাব দখল করে রেখেছে। এখন তারা নানা টালবাহানা করে এই দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখতে চায়। আমি প্রয়োজনে আবার প্রেসক্লাবে যাবো। যতদিন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার পূরণ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। কোন অপশক্তি আমাদের থামাতে পারবে না।
প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক অগ্রবাণী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার নাজমুল হোসেন আশিক বলেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রেসক্লাবে সদস্য পদ দেওয়া সহ তিন দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রেসক্লাবে যাই। সেখানে গেলে আমাদের একজন সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ বলেন, তুই এখানো কেনো। তখন রনী ভাই এর প্রতিবাদ করতে গেলে সাংবাদিক মাসুদ গালিগালাজ করেন। এ সময় মাসুদ ভাইয়ের সাথে থাকা সকল সাংবাদিকরা রনী ভাই সহ আমাদের উপরে হামলা চালায়। এতে আমাদের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে।পাল্টা অভিযোগ করে
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সোজাসাপ্টা পত্রিকার সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ বলেন, মাসুদ রানা রনির নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত প্রেসক্লাব দখল করার উদ্দেশ্যে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় প্রেস ক্লাবে উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদেরকে বাধা দিতে গেলে আমাকে কিল ঘুষি মারে। প্রেস ক্লাবের টিভি ভাঙচুর করেছে। পরে পুলিশ এসে রনিকে আটক করে নিয়ে গেছে । এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন বলেন, রনির নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একদল দুর্বৃত্ত ক্লাবের পাঁচতলায় উঠে হামলা ও ভাংচুর করে। এ সময় ক্লাবে অবস্থানরত সাংবাদিকরা তাদের বাঁধা প্রদান করলে সাংবাদিকদের উপর হামলা করে। এতে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাবেক স্টাফ রিপোর্টার ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এসময় রনি নামে একজন কে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনা শুনে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত সাংবাদিক রনিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। এখন তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।