বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জ শহরে জলাবদ্ধতা, ঘরে হাঁটু পানি

নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক থেকে ছবিটি তুলেছেন- মাহমুদুল ইসলাম সৌরভ

স্টাফ রিপোর্টার :

নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের কিছু নিচু এলাকায় ঘরের ভেতরে জলাবদ্ধতার পানি প্রবেশ করেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের লাখ লাখ বাসিন্দা। 

সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে সদর উপজেলার শহর অঞ্চল ও ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও বিঘা সমান পানি জমেছে।

জানা গেছে, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এরপর সকাল থেকে থেমে থেমে অনবরত বৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পানির নিতে তলিয়ে যায়। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পানি কমতে শুরু করেছে। আর শহরতলীর বিভিন্ন এলাকা ও পাড়া-মহল্লায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি নিচু এলাকায় ঘরের ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও বিঘা পানি জমেছে। ভারী বর্ষণের ফলে ঘরে হাঁটু সমান পানি জমেছে।

পানি জমায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাসদাইর খেয়া ঘাট এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক সোনালী আক্তার বলেন, রাত থেকে ভারী বৃষ্টিতে ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। শোবার ঘরে খাটের বিছানা পানিতে ছুই ছুই অবস্থা। ঘরের চুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। হাটু সমান পানিতে কিভাবে বসবাস করবো বুঝতে পারছিনা।

জলাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইমন সরকার বলেন, ঘরের বাহিরে বের হওয়ার জায়গা নেই। পুরো সড়ক জুড়ে পানি আর পানি। প্রয়োজনীয় কাজ সারতে রিকশায় চড়ে মূল সড়কে গিয়ে দেখি সেখানেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে কখনো এতো পানি জমেনি। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,

 নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ড, ১২ নম্বর ওয়ার্ড সহ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়ন, কাশিপুর ইউনিয়ন, ফতুল্লা ইউনিয়ন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কিছু অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় কয়েক লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোরশেদ বলেন, ‘বৃস্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে কাজ করেও জলাবদ্ধতার পানি কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছেনা। স্বাভাবিকভাবে ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে পানি কমে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত জলাবদ্ধতার পানি কমছেনা। নদীর পানির স্তর আর ড্রেনের স্তর এক হয়ে গেছে, যেকারণে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হচ্ছেনা। এটা খুবই হতাশাজনক। তারপর আমরা কাজ করে যাচ্ছি, পানি অপসারণের জন্য  যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম ছক্কু বলেন, এমনিতে সারা বছর তল্লা রেল লাইন থেকে হাজিগঞ্জ এলাকা পর্যন্ত সব সময় জলাবদ্ধতা থাকে। তার ওপরে বৃদ্ধির পানিতে পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আসলে আমাদের ইখতিয়ার কতখানি তা আপনাদের জানা আছে। তাছাড়া বাজেটের বিষয় রয়েছে। তবে ড্রেনের লাইন পরিষ্কার করলে জলাবদ্ধতা সমস্যা কিছুটা হলেও কমতে পারে। 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই ইউনিয়নের পাশে একই খাল রয়েছে। প্রভাবশালীদের কারণে খালটি প্রায় দখল হয়ে ভরাট হয়ে গেছে। যেকারণে পানি নামার জায়গা নেই। এদিকে গতরাত থেকে ভারী বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। আমার ৯টি ওয়ার্ডের মেম্বারদের নিয়ে আমি কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু পানি অপসারণের সুযোগ নেই। তবে ভারী বৃষ্টি না হলে পানি কমে যাবে।