মন্ত্রীর বাসভবনে ভুরিভোজ শেষে টাকা বিতরণ, ভিডিও প্রকাশ করলেন তৈমুর

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বাসভবনে ভুরিভোজ করিয়ে টাকা বিতরণ করার একটি 

ভিডিও প্রকাশ করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব ও ওই আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। এতে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। 

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভিডিও প্রকাশের বিষয়টি তিনি সময়ের আলোকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই ভিডিও তুলে ধরেন।

ভিডিও প্রসঙ্গে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বাসভবনে শুক্রবার ভুরিভোজের সময়ে সেখানে উপস্থিত প্রত্যেককে এক হাজার করে টাকা দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী গাজীর পক্ষ থেকে তার অনুসারী ও জেলা পরিষদের সদস্য আনসার আলী প্রকাশ্যে এই টাকা বিতরণ করছেন। যদি এভাবে টাকা বিলি করা হয়, তাহলে এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। এভাবে টাকা বিতরণ করে প্রভাব বিস্তার করলে সুষ্ঠু নির্বাচন করার বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। প্রার্থীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়। এই বিষয়ে জেলা নির্বাচন কমিশন কে জানিয়েছি। মূলত গাজী সাহেবের গণবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে তার নির্বাচনী অবস্থা দূর্বল দেখে তিনি এখন টাকার বিনিময়ে ভোট কিনছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত করতে নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

তৈমুর আলম খন্দকার প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কমিটমেন্ট নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, নির্বাচন প্রভাবমুক্ত হবে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে, ভোটার, প্রার্থী এবং ভোটকেন্দ্র নিরাপদ থাকবে এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। যদি এর ব্যত্য়য় ঘটে তবে সাধারণ মানুষ এবং প্রার্থীরা এই নির্বাচন থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তখন দেখা যাবে শুধু নৌকার প্রার্থীরাই থাকবে অন্য কোন প্রার্থীরা মাঠে নাই। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়গুলো দেখভালের অনুরোধ করে বলবো, পরিস্থিতি যদি একবার খারাপের দিকে যায় তাহলে তার নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হবে।

বিষয়টি অস্বীকার করে টাকা বিতরণকারী জেলা পরিষদের সদস্য আনসার আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জন্মদিন ছিল, সেদিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর  প্রধানমন্ত্রী জন্মদিন উপলক্ষে মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর রূপসীর বাসভবনে সর্বস্তরের জনগণকে খাওয়ানো হয়। সেখানে উপস্থিত জনগণকে যাতায়াত বাবদ ১০০ করে টাকা দেওয়া হয় যাতে তারা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে। ওই দিনের ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনে আগে মিথ্যাচার করেছেন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। আমি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তার বিচার দাবি করি। প্রসঙ্গত, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে ৯ জনের মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। তারা হলেন, 

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী-(আওয়ামী লীগ), তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব  তৈমুর আলম খন্দকার- (তৃণমূল বিএনপি), শাহাজাহান ভুইয়া- (স্বতন্ত্র), গাজী গোলাম মর্তুজা- (স্বতন্ত্র), মো. হাবিবুর রহমান- (স্বতন্ত্র), মো. জোবায়ের আলম- (স্বতন্ত্র), মো. সাইফুল ইসলাম- (স্বতন্ত্র), মো. জয়নাল আবেদীন চৌধুরী- (স্বতন্ত্র), একেএম শহিদুল ইসলাম- (ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ)।