মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফের সাক্ষ্য দিলেন তদন্ত কর্মকর্তা

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন।

সাক্ষ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা হলেন- মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। তিনি তৃতীয় বারের মত সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসূলি রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর এস এম শফিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের সবাই বলেছেন, ওই ঘটনার দিন মামুনুল হক ও মামলা বাদী একই কক্ষে প্রায় ৫ ঘণ্টা অবস্থান করেন। একজন নারী ও পুরুষ এতো সময় এক কক্ষে কী করেন। এই ঘটনার পরে মামুনুল হক তার স্ত্রীকে ফোনে জানায়, ওই নারী (মামলার বাদী) তার বন্ধু শহীদুলের স্ত্রী, তার স্ত্রী না। তাহলে একটা হোটেলে তারা ৫ ঘণ্টা কেন অবস্থান করলো? আমার দৃষ্টিতে মামুনুল হকের সর্বোচ্চ সাজা হবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন প্রশ্নের সদোত্তর দিতে পারেনি। এটা একটা মিথ্যা মামলা।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সকালে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আজ ২৬ নম্বর সাক্ষী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি রুমে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা সহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতে ইসলাম ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাদেরকে ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেফতার করে। রয়েল রিসোর্ট কান্ডের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের আদালত।