নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ককটেল, পেট্রলবোমা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ জেলা ছাত্রদলের ৪ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৬ নভেম্বর) ভোরে রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নের কাজিরবাগ এলাকার জনৈক সাইফুল ইসলামের দোতলা বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি ককটেল, ১০টি পেট্রলবোমা, একটি বিদেশি পিস্তল ও ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ বিল্লাহ ও দাউদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা তৌহিদ হাসান।
সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, বিএনপির হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা সহ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানাধীন মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা করে আসছিল। ফলে সহিংসতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নেয় পুলিশ। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার (৬ নভেম্বর) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানাধীন দাউদপুর ইউনিয়নের কাজিরবাগ এলাকার জনৈক সাইফুল ইসলামের দোতলা বাড়ি থেকে ১২টি ককটেল, ১০টি পেট্রলবোমা, একটি বিদেশি পিস্তল ও ম্যাগজিনসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা পুলিশকে জানায়, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানায় বিএনপি-জামায়াতের হরতাল ও অবরোধে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনায় ও ঘটনায় জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করেছে। তাদের মোবাইলফোনের সংরক্ষিত ম্যাসেজ, কথোপকথন, ছবি ও ভিডিও পর্যালোচনা করে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের অন্যান্য সহযোগী ও হুকুমদাতাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, তারা যে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে, এর সঙ্গে বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে। জেলা বিএনপির প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। মোবাইলে আমরা তাদের যোগাযোগ পেয়েছি। সেখানে মেসেজ অপশনে দেখেছি ২৮ তারিখের পরবর্তী গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় নির্দেশনা রয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৮ তারিখ বিএনপির সমাবেশ হয়েছিল পল্টন এলাকায়। সেদিন কাকরাইলসহ আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সেখানে আমাদের একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন সারা দেশে হরতাল দিয়ে নৈরাজ্য ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে তারা। পরবর্তী তিন দিনের অবরোধে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে গাড়ি পোড়ানো ও সহিংসতার ঘটনা দেখেছি। রূপগঞ্জে একটি কভার্ডভ্যানে আগুনসহ যে ভাঙচুর ও নৈরাজ্য পাশাপাশি আড়াইহাজারের পাচরুখী এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা ভিডিও দেখে নিশ্চিত হয়েছি এসকল ঘটনায় সরাসরি কারা জড়িত। অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।