হত্যাকাণ্ডে জাকির খান জড়িত থাকার কথা বলেনি সাক্ষীরা

নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানের বিরুদ্ধে দুই জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তারা কিছু জানেনা ও দেখেনি বলে আদালতকে জানিয়েছেন। এমনকি এই মামল জাকির খানের জড়িত থাকার কথা বলেনি সাক্ষীরা। 

বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উম্মে সরাবন তহুরার আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষ্য প্রদানকারী দুজন হলেন- শফিক মিয়া ও আমিন। 

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ বলেন, ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ কারণে আসামি

 জাকির খানকে আদালতে আনা হয়েছিলো। পরে সাক্ষ্য শেষে জাকির খানকে আবারও কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামি পক্ষের আইনজীবী সরকার হুমায়ুন কবির বলেন, আজকে শফীক ও আমিন নামে দুজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে সাক্ষীরা এই ঘটনা সম্পর্কে জানেনা এবং দেখেনি বলে জানিয়েছেন। তারা দুজনে যথাক্রমে ৯ ও ১০ নম্বর সাক্ষী ছিল। এই মামলায় মোট ৫২ জন সাক্ষী রয়েছে।

জাকির খানের চিকিৎসার জন্য আদালতে দরখাস্ত দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাকির খানের অসুস্থতার জন্য আমরা আদালতে দরখাস্ত দিয়েছি। আদালত তার চিকিৎসার জন্য আদেশ দিয়েছে। তিনি খুব অসুস্থ। এ বিষয়ে আদালতকে অবগত করেছি। আদালত তার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন।

এর আগে সকালে কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় জাকির খানকে আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। এজন্য আদালতপাড়ায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। হাজিরা শেষে আবারো কঠোর নিরাপত্তায় তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, গত ২৮ মে শুনানির ধার্য্য তারিখে মামলার ৬ নম্বর সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী হাবিব উদ্দিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাব্বির হত্যাকান্ডের সময়ে সেখানে জাকির খানকে তিনি দেখেন নি। এমনকি জাকির খান কে তিনি চিনেন না বলে আদালতে জানিয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার। এ হত্যাকান্ডের পর তার বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদি হয়ে ১৭ জনকে আসামি করে ফতল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তিতে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।

সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামি করে চার্জশীট দাখিল করেন। এতে মামলা থেকে বিএনপির সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল ও শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামি উল্লেখ করা হয়। 

ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার। তবে দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে  তৈমুর  আলম খন্দকার আদালতে দাখিলকৃত না রাজি পিটিশনটি আবেদন করে প্রত্যাহার করে নেন।