বিএনপি নেতা দিপু ভূইয়ার নাম বাদ দেয়ায় ক্ষুব্ধ সেলিম প্রধান


BANGLAR NARAYANGANJ | Banglar Narayanganj প্রকাশিত: Feb 2, 2025 বিএনপি নেতা দিপু ভূইয়ার নাম বাদ দেয়ায় ক্ষুব্ধ সেলিম প্রধান
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর নির্দেশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে হামলা হলে মামলা থেকে দিপুর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধান।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সিনেমন রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে পাপ্পা গাজীর নির্দেশে  বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু ওরফে দিপু ভূইয়ার লোকজন এই হামলা চালিয়েছে ও লুটপাট করেছে। গাজীর সব সেক্টর সে এখন নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে এরূপ হামলার পরেও ছাত্রদল ও যুবদলের মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও কাল্পনিক। মূলত আমার জমিতে গড়ে ওঠা বিসমিল্লাহ আড়ত থেকে প্রতিমাসে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করছে দিপু ভূইয়ার লোকজন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় আমাকে দমিয়ে রাখতে এই হামলা করেছে। 

৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে কিছুদিন পর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারী গোলাম ফারুক খোকন আমার সাথে দেখা করে। সেখানে খোকনের সাথে সেই গাজীর লোক মজিবুর, বালু হাবিবরের ভাতিজা আইয়ুব এক সাথে বসা ছিল। এটা দেখে আমি অবাক হই। তাদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে খোকন আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা এক কালীন সহ মাসে মাসে আরও টাকা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন। আমার জায়গা থেকে দখল সরাতে তারা এই টাকা দাবি করেন। 

ভুয়া চুক্তিনামা বানিয়ে তার আড়ত থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ভুয়া সই যুক্ত করে গাজীর লোকজন বিগত সময়ে ভুয়া চুক্তিনামা বানিয়ে আড়তের টাকা আত্মসাৎ করছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় সাবেক মন্ত্রী গাজীর বাহিনীর লোকজন গত বছর আমার বাড়িতে হামলা করেছিল। ঠিক একই কায়দায় এবার বিএনপি নেতা দিপু ভূইয়ার লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ৫ আগস্টের পরে দিপু ভূইয়া ও খোকন সাবেক মন্ত্রী গাজীর পার্টনার হয়ে গেছে। গাজীর অলিখিত মাফিয়া সাম্রাজ্য এ দিপু ভূইয়ারা নিয়ন্ত্রণ করছে। গাজীর লোকজন এখন সব দিপু ভূইয়া ও খোকনের হয়ে কাজ করছে। রূপগঞ্জে আগে ছিল গাজী লীগ এখন হয়েছে দিপু লীগ ও খোকন লীগ।  

মামলায় দিপু ও খোকনের নাম বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে সেলিম প্রধান বলেন, আমি এই ঘটনায় মামলা করেছি। তবে মামলার এজাহারে দিপু ভূইয়া ও খোকনের নাম আসেনি। কোন অদৃশ্য ক্ষমতার বলে পুলিশ তাদের নাম বাদ দিয়েছে তা আমার জানা নেই। একইভাবে গত বছর সাবেক মন্ত্রী গাজীর নির্দেশে তার লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনায় মামলা করতে গেলে গাজী ও পাপ্পা গাজীর নাম আসামিদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারের ঘটনায় আমি আইনি ব্যবস্থা নেব। আমি সবার কাছে বিচার চাই। 

জানা গেছে, সেলিম প্রধানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. মজিবুর রহমান ও আইয়ুব আলী সহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৪০০- ৫০০ জনকে আসমি করা হয়। তবে সেই এজাহারের তালিকায় বিএনপি নেতা দিপু ভূইয়া ও খোকনের নাম নেই। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, মামলার বাদী যেভাবে আসামিদের নাম দিয়েছে সেভাবে আমরা দিয়েছি। কারও নাম বাদ দেওয়া হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, এই হামলার ঘটনায় শুটার অলি নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে মামলার এজাহার নামীয় আসামি। ওই দিন হামলার সময়ে প্রকাশ্যে তাকে গুলি করতে দেখা গেছে। ভিডিও দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) দুপুরে বিএনপির নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর নির্দেশে তার লোকজন রূপগঞ্জের সাওঘাট এলাকায় সেলিম প্রধানের বাড়িতে হামলা চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে গুলিবিদ্ধ সহ ৫ জন আহত হয়েছেন। সেলিম প্রধানের বাড়িতে থাকা ১০টি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় ও লুটপাট করা হয়।